বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় তাইওয়ানে বিশ্ব আইটি সম্মেলন শুরু


ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর: তাইওয়ানের তাইপে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (টিআইসিসি) শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির (ডাব্লিউসিআইটি) ২১তম সম্মেলন। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট টাসি ইং-ওয়েন  আজ (১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭) সকালে তিনদিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাইওয়ানের পলিটিক্যাল কমিশনার উ জেং জং, কাউন্সিলর এড্রি ট্যাং, অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী জং-চিন সেন, তাইপের মেয়র কো ওয়েন-জে, উইটসা চয়ারম্যান ইভোনি চিউ  প্রমুখ।

প্রেসিডেন্ট টাসি ইং-ওয়েন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ১৭ বছর পর তাইওয়ানে আবার শুরু হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির এই বিশ্ব  সম্মেলন। এই সময়ের মধ্যে প্রযুক্তিগতভাবে তাইওয়ান অনেক এগিয়েছে। এখন আমরা একটা ডিজিটাল জাতি গঠনের কাছাকছি পৌঁছে গেছি। তিনি বলেন, তাইওয়ান এখন হার্ডওয়্যার শিল্পের জন্য ইনোভেটিভ উদ্ভাবনের দিকে মনোযোগ দিয়েছে। তাই ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (এআই) নিয়ে এখন আমরা কাজ করছি।

এর আগে গতকাল (১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭) বিকেলে তাইওয়ানের অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী জং-চিন সেন ডাব্লিউসিআইটি সম্মেলনে আগত অতিথিদের ‘ওয়েলকাম রিশেপশন’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানে স্বাগত জানান। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের আয়োজক ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স (উইটসা) এর চেয়ারম্যান ইভোনি চিউ, ডেপুটি চেয়ারম্যান ড. রায়ুুল কোলচার, পরিচালক মোঃ সবুর খান প্রমুখ। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর এই সম্মেলন শেষ হবে।

মন্ত্রী জং-চিন সেন এ সময় তাইওয়ানকে এবারের সম্মেলনের হোস্ট কান্ট্রি নির্বাচিত করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং তাইওয়ানের ভবিষ্যত প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

উইটসা চেয়ারম্যান ইভোনি চিউ জানান, আগামী ২০১৮ সালের ডাব্লিউসিআইটি সম্মেলন ১৯-২১ ফেব্রুয়ারী ভারতের হায়দারাবাদে অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৯ সালে তথ্যপ্রযুক্তির এই বিশ্ব  সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আর্মেনিয়ায় এবং ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হবে মালয়েশিয়ায়। এরপরই ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর বছর বাংলাদেশে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি তুলে ধরার জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

তাইপে থেকে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির মহাসচিব সুব্রত সরকার জানান, বাংলাদেশের ৫৩ সদস্য’র একটি প্রতিনিধিদল এবারের বিশ্ব আইটি সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। প্রতিনিধিদলে বিসিএস সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ ছাড়াও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বানিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সংবাদ মাধ্যমের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন। দেশের বাইরে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক কোন অনুষ্ঠানে এ পর্যন্ত এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে। তাছাড়া, সম্মেলনের পাশাপাশি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সেবা ও পণ্য প্রদর্শনের জন্য একটি সুপরিসর প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়েছে বলে প্রদর্শনীস্থল থেকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স সংক্রান্ত দায়িত্বপালনকারী বিসিএস পরিচালক শাহিদ-উল-মুনীর জানান। সেখানে ’ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণসম্বলিত তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের অগ্রগতি’র হালনাগাদ চালচিত্র বিশ্ব-তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের নিকট তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সম্মেলনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি অর্ধডজনেরও অধিক উদ্যোগ এবছর পুরস্কৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের জন্য পুরস্কার প্রাপ্তির দিক থেকে এযাবতকালের সর্বাধিক।

উল্লেখ্য, এবারের ডাব্লিউসিআইটি ২০১৭ সম্মেলনের পাশাপাশি একই সময়ে এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (অ্যাসোসিও) আইসিটি সামিট ২০১৭ এবং এশিয়া প্যাসেফিক কাউন্সিল ফর ট্রেড প্যাসিলিটেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিজনেস (এএফএসিটি) প্ল্যানারি মিটিং ২০১৭ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল (১০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত অ্যাসোসিও জেনারেল অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বর্তমান বিসিএস সভাপতি ও অ্যাসোসিও ভাইসচেয়ারম্যান আলী আশফাক এবং প্রাক্তন বিসিএস সভাপতি ও প্রাক্তন অ্যাসোসিও চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ এইচ কাফী’র একাধিক প্রস্তাবনাগ্রহণ পূর্বক আগামী বছর থেকে ‘অ্যাসোসিও আইসিটি সামিট’ শিরোনাম পাল্টিয়ে ‘অ্যাসোসিও জিডিটাল সামিট’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

                                    বিসিএস জনসংযোগ বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত