বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো কুমিল্লা ২০১৯ এর শুভ উদ্বোধন


১৮ এপ্রিল ২০১৯, বৃহষ্পতিবার, কুমিল্লা : ডিজিটাল কুমিল্লা নগরীতে সর্বস্তরের জনগণ এখন যে কোন স্থান থেকে ২৪ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে সাত দিন ট্যাপ এন পে এজেন্ট অথবা নিজস্ব মোবাইলে ট্যাপ এন পে অ্যাপস’র মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের যে কোন বিল (পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্স ফি, হোল্ডিং ট্যাক্স ফি, জন্ম সনদ ফি, নাগরিক সার্টিফিকেট) এমনকি পৌরকর জমা দিতে পারছেন। এগুলো সব ডিজিটাল যুগের আশির্বাদ। নিজের স্মার্টফোন বা তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য এখন সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।

১৮ এপ্রিল (বৃহষ্পতিবার) কুমিল্লার নিউ মার্কেটের ৫ম তলায় কুমিল্লা আইটি পার্কে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) কুমিল্লা শাখা কতৃক আয়োজিত ‘বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো কুমিল্লা ২০১৯’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু। এসময় তিনি কুমিল্লা আইটি পার্কও উদ্বোধন করেন।

তিনি আরো বলেন, কুমিল্লা নিউ মার্কেটের ৫ম তলাকে কুমিল্লা আইটি পার্ক করার জন্য আমাদের চেষ্টা উল্লেখযোগ্য। কুমিল্লার মানুষকে প্রযুক্তি বান্ধব করার জন্য বিসিএস এর এই প্রদর্শনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সময়োপযোগী এ আয়োজন তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ ও সৃষ্টিশীল করবে। খুলে দেবে সম্ভাবনার দুয়ার। বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার রোবটকে কাছ থেকে দেখা এবং কথা বলার সুযোগ এই মেলাতে মিলছে। এতে তরুণ প্রজন্মরা রোবট তৈরিসহ বিজ্ঞানের নিত্যনতুন প্রযুক্তিকে নিজেদের হাতে তৈরি করার ব্যাপারে আগ্রহী হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার সাহা। তিনি বলেন, একটা সময় ডিজিটাল বাংলাদেশ বললে মানুষ ঠাট্টা তামাশা করতো। পদ্মা সেতু যখন নিজেদের অর্থায়নে করার কথা বলা হয়েছিল তখনো অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। এখন ৭০ শতাংশ কাজ দৃশ্যমান। কুমিল্লার সঙ্গে রাজধানীর দুরত্বও একসময় চোখে পড়ার মতো ছিল। আর এখন সারা পৃথিবী মানুষের হাতের মুঠোয়। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো ইন্টারনেটও মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় একটি চাহিদা হিসেবে রুপান্তরিত হয়েছে। বিসিএস এক্সপো কুমিল্লা ২০১৯ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য উল্লেখযোগ্য একটি ইভেন্ট। এই প্রদর্শনীতে নিত্যনতুন প্রযুক্তি দেখার পাশাপাশি মানুষ বিভিন্ন অফারে কম্পিউটার পণ্যগুলোও কেনার সুযোগ পাবে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিএস সভাপতি মো. শাহিদ-উল-মুনীর বলেন, রাজধানীর কাছাকাছি এই শহরটির মানুষ বরাবরই তথ্যপ্রযুক্তি বান্ধব। তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যগুলোর প্রতি ক্রেতা এবং দর্শনার্থীদের আগ্রহ থেকে এই প্রদর্শনী সফল হবে বলেই আমার বিশ্বাস। কুমিল্লার এই প্রদর্শনীতে রোবটের সঙ্গে কথা বলার যে আকর্ষণীয় সুযোগ রয়েছে, তা এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রতি আকৃষ্ট করবে।  

বিসিএস এক্সপো কুমিল্লা ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বিসিএস এর মহাসচিব মোশারফ হোসেন সুমন বলেন, প্রযুক্তি বিপ্লবের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে সামিল হতে সরকারের সদিচ্ছার সাথে বিসিএস এর প্রচেষ্টা অন্তহীন। আমরা চাইছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, বিগ ডাটা, ব্লক চেইন, আইওটিসহ ভবিষ্যত প্রযুক্তির কাঙ্ক্ষিত বিকাশ। ‘বিসিএস ডিজিটাল এক্সপো কুমিল্লা ২০১৯’ সেই ধারাবাহিক কার্যক্ররেই অংশ। এই প্রদর্শনী কুমিল্লার মানুষকে হালনাগাদ আইটি পণ্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিসিএস কোষাধ্যক্ষ জাবেদুর রহমান শাহীন, পরিচালক ইঞ্জি. সুব্রত সরকার, আছাব উল্লাহ্ খান জুয়েল, স্মার্ট টেকনোলজি বিডি লিমিটেডের পরিচালক মুজাহিদ আল বেরুনী সুজন, লেনোভোর প্রোডাক্ট ম্যানেজার খালিদ বিন আহমেদ, বিসিএস কুমিল্লা শাখার সেক্রেটারি মো. জহিরুল আলম, কুমিল্লা আইটি পার্কের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ উল্লাহ, প্রমুখ। এক্সপোতে বিসিএস ডিজিটাল এক্সপোর স্মরণীকা উন্মোচন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস কুমিল্লা শাখার চেয়ারম্যান মো.মোয়াজ্জেম হোসেন বুলবুল। প্রদর্শনীর প্লাটিনাম স্পন্সর আসুস, এইচপি, লেনেভো এবং লজিটেক। গোল্ড স্পন্সর টিপি-লিংক এবং ওয়াল্টন ল্যাপটপ। সিলভার স্পন্সর হিসেবে থাকছে ডেল, রেপো এবং টেন্ডা। এছাড়া রোবোটিক পার্টনার ক্যাসপারস্কি ল্যাব, গেমিং পার্টনার গিগাবাইট, ওয়াইফাই পার্টনার কুমিল্লা আইটি পার্ক, সিকিউরিটি পার্টনার এবং দাহুয়া। টিকেট স্পন্সর বি-ট্রেক ও টিকিট কাউন্টার স্পন্সর ডি-লিংক এবং ভলান্টিয়ার ড্রেস স্পন্সর টেন্ডা। প্রদর্শনীর শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার স্পন্সর ইপসন।

বিসিএস এক্সপোতে প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। শিক্ষার্থী, সাংবাদিক এবং রোটারি ক্লাবের সদস্যরা পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবে। সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চালু থাকবে। মেলায় দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও মেলার বিক্রিত টিকেট নিয়ে সমাপনী দিনে র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। আর এতে থাকবে বিভিন্ন আকর্ষণীয় উপহার। পাঁচদিনব্যাপী এই মেলা ২২ এপ্রিল শেষ হবে।